By Sadia Islam Brishti
লাল, নাকি নীল- কোন রঙটা মানাবে আপনার ছোট্ট শিশুর ঘরে? আর শিশুর রঙিন ঘরটি, সেটা তার জন্য নিরাপদ তো? সারাটা সময় যে ছোট্ট ঘরটিতে শিশু খেলবে, সেটা যেমন রঙচঙে হওয়া চাই, তেমনি হওয়া চাই নিরাপদ।
শিশুদের জন্য ঘরকে নিরাপদ রঙ দিয়ে রাঙিয়ে তুলতে খেয়াল রাখুন-
১। রঙে ভিওসি বা ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড আছে কিনা। ভিওসি আছে এমন রঙ হাঁপানি এবং এবং অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি করে। বিশেষ করে, শিশুদের জন্য অসম্ভব ক্ষতিকর এই রঙ। বর্তমানে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই বার্জার নিয়ে এসেছে ‘বার্জার ব্রিদ ইজি’। এই রঙ-এ ভিওসি নেই একেবারেই। তাই শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে বাড়তি চিন্তাও নেই!
২। রঙে বিষাক্ত উপাদান আছে কিনা। রঙকে আরও বেশি টেকসই করে তুলতে অনেকেই নানারকম বিষাক্ত উপাদান এতে ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে- নানাবিধ ধাতব পদার্থ, অতিরিক্ত পরিমাণ কালারেন্ট ইত্যাদি। এই উপাদানগুলো যত বেশি ব্যবহার করা হবে, রঙ হয়ে পড়বে তত বেশি বিষাক্ত। তাই এমন রঙ থেকে বিরত থাকুন, যেগুলো এইসব উপাদান ব্যবহার করে রঙ করে!
৩। রঙটি পরিবেশের জন্য ভালো কিনা। বাজারে এমন অনেক রঙ পাওয়া যায়, যেগুলো পরিবেশের জন্য মোটেই ভালো নয়। এই রঙ যে শুধু পরিবেশের ক্ষতি করে তাই নয়, একইসাথে শিশুর স্বাস্থ্যের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। চেষ্টা করুন পরিবেশের জন্য স্বাস্থ্যকর এমন রঙ বেছে নিতে।
৪। আপনার শিশুটি রঙের সংস্পর্শে যেতে পারবে কিনা। বাজারে যে রঙ পাওয়া যায়, সেগুলোর সবগুলো কিন্তু তাৎক্ষনিকভাবে শিশুদের জন্য ইতিবাচক নয়। অর্থ্যাৎ, এক্ষেত্রে রঙ শুকানোর আগ পর্যন্ত শিশুদের রঙের কাছে না যাওয়াই ভালো। তবে আপনি যদি আপনার শিশুর ঘর রাঙাতে ‘বার্জার ব্রিদ ইজি’ রঙটি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে এই সমস্যা একদম থাকবে না। রঙ ব্যবহার করা থেকে সেটা শুকানো পর্যন্ত- সবসময় আপনার শিশু থাকতে পারবে তার নিজের ঘরেই!
৫। রঙটি হালকা কিনা। চেষ্টা করুন খুব বেশি গাঢ় রঙ-এর বদলে একটু হালকা রঙ দিয়ে শিশুর ঘরটি সাঁজাতে। এতে করে শিশুর স্বাস্থ্যকে আরও বেশি সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে।
শিশুর ঘরে আঁকিবুঁকি থাকবেই। শিশু শুধু খাতা নয়, তার আঁকিবুঁকি ছড়িয়ে দেয় ঘরের মেঝে এবং দেয়ালেও! কীভাবে রঙিন দেয়াল থেকে এই আঁকিবুঁকিকে উঠিয়ে নেবেন? ছোট্ট কিছু কৌশল থাকলো আপনার জন্য!
দেয়ালের দাগটি যদি তখনো শুকনো থাকে, তাহলে একটি কাপড় বা তোয়ালেতে খানিকটা সাবান মেশানো পানি নিয়েই সেটাকে মুছে ফেলতে পারবেন আপনি।
পেন্সিলের দাগ মুছতে যে ইরেজার ব্যবহার করেন, সেটা দিয়ে দেয়ালের দাগটি উঠিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন
একটু পানিতে খানিকটা বেকিং সোডা মিশিয়ে সেটাতে একটি কাপড় ভেজান। তারপর সেই কাপড়টি দিয়ে দেয়ালের দাগ উঠিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।
খানিকটা জেলবিহীন টুথপেস্ট নিয়ে দেয়ালের দাগের উপরে রেখে দিন। মিনিট দশেক এভাবেই রাখুন। তারপর একটি কাপড়কে পানিতে ভিজিয়ে টুথপেস্ট মুছে ফেলুন। দেখবেন, দাগ উঠে গিয়েছে!
দেয়ালের দাগ মুছে ফেলার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে বার্জার রবিয়াল্যাক টি৬ থিনার ব্যবহার। একটি কাপড়ে সামান্য বার্জার রবিয়াল্যাক টি৬ থিনার নিয়ে দাগযুক্ত স্থানটি ঘষে নিন। রঙ পেন্সিল, চা, কফি যেকোনো দাগ হবে সহজেই পরিষ্কার আর দাগমুক্ত। তবে কলমের কালি ওঠাতে একটু বেগ পেতে হবে। এটি দেয়ালে কলমের দাগকে পুরোপুরি ওঠাতে না পারলে খানিকটা রঙ আবার নতুন করে দাগযুক্ত স্থানে করে নিতে পারেন। এতে করে আপনার দেয়ালকে একদম নতুনের মতো দেখাবে!
তবে, এসবের কোনটাই দেয়ালের রঙকে পুরোপুরি ওঠাতে না পারলে খানিকটা রঙ আবার নতুন করে দাগযুক্ত স্থানে করে নিতে পারেন। এতে করে আপনার দেয়ালকে একদম নতুনের মতো দেখাবে! ভয় পাচ্ছেন, এতোকিছু করতে গেলে দেয়ালের রঙ উঠে যাবে কিনা? কোন ভয় নেই! বার্জার ব্রিদ ইজি দেয়ালে টেকে অনেকদিন। তাই কোনকিছুতেই আপনার শিশুর ঘরের রঙ ফিকে হবে না একদম!
সবশেষে প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে কোন রঙটি কিনলে সবচাইতে ভালো হবে? অবশ্যই ভিওসি নেই এবং বিষাক্ত নয়, শিশুর ঘরের জন্য এমন রঙই হওয়া উচিৎ আপনার প্রথম পছন্দ। যার সবগুলোই আপনি পাবেন বার্জার ব্রিদ ইজিতে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব যেকোনো রঙ-ই বেছে নিতে পারেন আপনি। শিশুর জন্য যখন নিচ্ছেন, তাহলে সেরাটাই নয় কেন?
শিশুর ঘর রাঙাতে ব্যবহার করুন সবচাইতে নিরাপদ রঙটি। শিশুর ঘরটি যেন তার জন্য হয় নিরাপদ আশ্রয়। তাই সচেতনভাবে রঙ বাছুন, আপনার শিশুকে সুস্থ রাখুন!