টেক্সচার্ড পেইন্ট: দেয়ালে আভিজাত্যের ছোঁয়া - Berger Home Diaries
parallax background

টেক্সচার্ড পেইন্ট: দেয়ালে আভিজাত্যের ছোঁয়া

By Tasnim Jarin

ঘরের দেয়াল অলংকরণে কখনো ইলিউশন, কখনো স্টেন্সিলে ডিজাইন, কখনো বা নান্দনিক সব রঙের ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে যে রঙেই রাঙাই না কেন, ঘরের দেয়ালকে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কিছু ডিজাইন কিংবা টেক্সচার যোগ করে তাতে ভিন্নতা আনার চেষ্টা আমাদের থাকে। আর এরই ধারাবাহিকতায় পছন্দের বিভিন্ন রঙে ঘরের দেয়াল রাঙানোর পাশাপাশি ইলিউশন করানো যেমন ট্রেন্ডি, তেমনি আরও চমৎকার কিছু লুক তৈরি করতে ঘরের দেয়ালে করাতে পারেন টেক্সচার্ড পেইন্ট।

প্রতিটি বাসা সাজানোর সময়ই আমাদের বাসার নির্দিষ্ট কোন দেয়াল বা কর্নার আমরা নির্ধারণ করে থাকি, যে দেয়ালটা হয়ে ওঠে আমাদের পছন্দের ক্যানভাস। সেখানে আমাদের ভালোলাগার মুহূর্ত যেমন জায়গা করে নিতে পারে, তেমনি দারুণ কোন ইলিউশন অথবা ভিন্ন একটা টেক্সচার্ড পেইন্ট করেও আমরা দারুণ একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারি। সাধারণ পেইন্ট কিংবা ইলিউশন নিয়ে আপনাদের ধারণা তো আছেই, চলুন এবার না হয় টেক্সচার্ড পেইন্ট সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

টেক্সচার্ড পেইন্ট অনেক সময় দেখতে থ্রিডির মতো দেখায়। ঘরের নির্দিষ্ট কোন অংশ কিংবা দেয়ালের জন্য আপনি এই পেইন্ট করাতে পারেন। রঙের লেয়ার এবং এর মধ্যে তৈরি করা একধরনের চাকচিক্য ভাব দেয়ালটিকে আরও বিশেষ করে তুলবে। এর ফলে স্মোকি, মার্বেল, কাঠ, মোসাইক ইত্যাদি যেকোনো ধরনের টেক্সচারই আপনি ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।

টেক্সচার্ড দেয়াল করার জন্য আপনাকে সবার প্রথম বিভিন্ন ডিজাইনের টেক্সচার্ড থেকে আপনার পছন্দেরটি সিলেক্ট করতে হবে। হতে পারে আপনি ভিন্ন ভিন্ন রুমের দেয়ালের জন্য একই টেক্সচার্ড ব্যবহার করবেন না। সেক্ষেত্রে প্রথমেই কোন দেয়ালে কী ধরনের টেক্সচার্ড মানাবে তা নির্ধারণ করেই তবেই পরবর্তী ধাপে যাওয়া উচিত। এ ধরনের টেক্সচার্ড দেয়ালের জন্য আপনাকে কিছু টেকনিক অনুসরণ করতে হবে এবং সেই টেকনিক অনুযায়ী টুলস ব্যবহার করতে হবে। তবে এই টুলসগুলো কিন্ত একেবারেই অপরিচিত কিছু নয়। পেইন্ট রোলার, পেইন্টারস টেপ, স্পঞ্জ ইত্যাদি।  

অন্যান্য পেইন্ট থেকে টেক্সচার পেইন্ট এর ভিন্নতা হচ্ছে ডিজাইন ভেদে এটি এতটা  মসৃণ নাও হতে পারে। এই দেয়ালগুলোর সারফেসে তাই অন্য দেয়াল থেকে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। খুব সূক্ষ্ম থেকে ক্রিয়েটিভ যেকোনো লুকের জন্যই টেক্সচার্ড পেইন্ট উত্তম। টেক্সচার্ড পেইন্টের মাধ্যমে হালকা এবং গাঢ় দুইটি শেইড এ ফুটিয়ে তোলা যায়, তেমনি এই পেইন্ট এর গভীরতা এবং এর ঘনত্ব এতটাই থাকে যেন এটি ক্যানভাসে আঁকা কোন আর্টের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।

স্মোকি টেক্সচার

টেক্সচার্ড দেয়াল করার ক্ষেত্রে স্মোকি স্টাইলটা বেশ জনপ্রিয়। এই টেক্সচারে আপনি শুধু ঘরের নির্দিষ্ট কোন দেয়ালই নয় বরং রুমের সবচেয়ে বড় দেয়ালে করতে পারেন। যা দেখলে মনে হবে যেন বিশাল বড় এক মাস্টারপিস। লিভিং রুম এবং বেডরুমের দেয়ালে এই স্মোকি টেক্সচার দিয়ে পেইন্ট করতে পারেন। স্মোকি টেক্সচারের কারণে রুমটা দেখতেও বড় দেখাবে আর সাথে আপনি যদি রুমে কন্ট্রাস্ট কালারের এলিমেন্টস রাখেন তবে তো দারুণ মানাবে।

স্মোকি টেক্সচারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলও আপনি চাইলে নিজেই এই ডিজাইন করতে পারবেন। একটি স্পঞ্জ ব্যবহার করেই এই স্মোকি টেক্সচার দেয়া সম্ভব। আর এর জন্য প্রথমে আপনাকে পছন্দের একটি বেজ কালার নিতে হবে। এবার পুরো দেয়ালটি পেইন্ট করে নিন। এবার একটি কন্ট্রাস্ট রঙে স্পঞ্জটি ভিজিয়ে নিয়ে তা একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং অন্যবার ঘড়ির কাঁটা চলার বিপরীত দিকে চক্রাকার প্যাটার্নে ডিজাইন করে নিতে হবে। ব্যস হয়ে গেল দারুণ সুন্দর এই টেক্সচার!

মার্বেল টেক্সচার

ঘরে ভিক্টোরিয়ান বা মেডিটেরিয়ান লুক আনতে মার্বেল টেক্সচার বেশ দারুণ একটা ভাইব তৈরি করে। মার্বেল বা স্টোনওয়ার্ক হিসেবে পরিচিত এই ডিজাইনটি ঘরের পরিবেশে খুব শান্ত একটি আবহ তৈরি করে। এই টেক্সচার দেয়ার প্রসেসটা একটু ভিন্ন। এর জন্য একটা ফ্ল্যাটেন সারফেসে রঙ করা শেষে দেয়ালে গ্লেজ যোগ করা হয়। আর এই গ্লেজটি শুকিয়ে যাওয়ার আগেই এর উপর একটি প্লাস্টিকের শিট রাখা হয় এবং পরবর্তীতে যখন শিটটা সরিয়ে ফেলা হয়, তখন দেয়ালের মার্বেল টেক্সচার প্যাটার্নটি দৃশ্যমান হয়, যা দেখতে অসাধারণ দেখায়! ড্রইংরুমের দেয়ালের জন্য এই ধরনের মার্বেল টেক্সচার বেশ ভালো মানায়।   

ফেব্রিক টেক্সচার

যারা হালকা শেইডের রঙ ঘরের দেয়ালের জন্য পছন্দ করেন তারা হালকা শেইডকে ফোকাস করে কন্ট্রাস্ট রঙে ঘরের দেয়ালের জন্য ফেব্রিক টেক্সচার করাতে পারেন। ফেব্রিক টেক্সচার এক ধরনের ভেলভেট ভাব ফুটিয়ে তোলে, যা কিনা ঘরের ভেতরে আরও আরামদায়ক ভাব তৈরি করে। আর এ কারণেই বেডরুমের জন্য এই ফেব্রিক টেক্সচারে পেইন্ট বেশি করা হয়। ফেব্রিক টেক্সচারও স্পঞ্জিং টেকনিকের মাধ্যমে করা হয়। যেখানে একটি স্পঞ্জার রোলারে পেইন্ট ভালোভাবে লাগিয়ে নিয়ে, তা দেয়ালে ডিজাইনের জন্য বিভিন্ন এঙ্গেলে টুইস্ট করে, তবেই দেয়ালে টেক্সচারটি ফুটিয়ে তোলা হয়। অতঃপর পছন্দের ফেব্রিকটি দেয়াল জুড়ে দৃশ্যমান হয়।

দেয়াল জুড়ে বিভিন্ন টেক্সচারে পেইন্ট করে নিতে তাই ঘরের আকৃতি অনুযায়ী পছন্দের যেকোনো ডিজাইনে টেক্সচারে পেইন্ট করে নিতে পারেন। এতে করে আভিজাত্যের দারুণ এক ছোঁয়ায় ঘর হয়ে উঠবে আরও নান্দনিক।

  •  
  •  
  •  
  •   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *