By Tasnim Jarin
দেয়াল রঙ করার কথা বললে প্রথমেই আমাদের মনে আসে প্লাস্টিক কিংবা এনামেল পেইন্টের কথা। আর সেই দেয়াল যদি হয় রসুইঘরের, তবে একটু গাঢ় রঙ বেছে নেওয়াই উত্তম। তবে গতানুগতিক এই ধারা থেকে বের হয়ে রসুইঘর বা রান্নাঘরের দেয়াল কিন্তু এখন দারুণ এক রূপ নিতে পারে। আর দেয়ালে এই পরিবর্তন আনবে নিত্যনতুন ডিজাইনের রঙিন সব প্যাটার্ন।
রসুইঘরের দেয়ালের জন্য রঙ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রঙগুলোই থাকা উচিত তালিকায় সবার প্রথমে। এতে করে বাকিসব ঘরের মতো এই ঘরটিও থাকবে প্রাণবন্ত এবং টিপটপ।
নীল- আকাশের নীল রঙটি যেন রান্নাঘরের দেয়ালে মানাবে বেশ। আর সেই নীলের মাঝে কাশফুলের সাদা কিংবা হলুদ ফুলের বৃত্ত বা লতাপাতার নকশা এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিবে। যদিও রান্নাঘরের ক্ষেত্রে সাদা রঙটি এড়িয়ে চলতে পারলেই ভালো। তবে দাগ আর ময়লার ভয় পেলে তো আর হবে না। সাবধানে থাকার পরেও দাগ বা ময়লা যদি ভরেই যায়, তবে স্পঞ্জে পানি দিয়ে খুব সহজেই আপনি দেয়াল পরিষ্কার করে নিতে পারবেন।
জলপাই রঙ- শেওলা বা জলপাই রঙের উজ্জ্বলতা কিছুটা কম হলেও, দেয়ালে কিন্তু বেশ মানানসই দেখাবে। সাধারণত শেওলা রঙের থেকে জলপাই রঙ দেয়ালে উজ্জ্বল দেখায়। আর যেহেতু এই রঙের উপর বিভিন্ন ডিজাইনের প্যাটার্ন করা সম্ভব, তাই কন্ট্রাস্ট কোন রঙে জ্যামিতিক ডিজাইন কিংবা রেখার আঁকিবুঁকিও ডিজাইনে করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে কিচেন কেবিনেট আর লাইট হোল্ডার সাদা রঙের হলে কিচেনটি বেশ মডার্ন লুক পাবে।
বাদামী বা কমলা- উজ্জ্বল কমলা হলে রঙটি চোখে লাগার সম্ভাবনা খানিকটা বেশি, তাই বাদামী আর কমলার মিশ্রণ, পিচ রঙ অথবা হালকা মেরুন রঙটি হতে পারে ফিউশন রান্নাঘরের জন্য পারফেক্ট এক উদাহরণ। দেখে যেন মনে হয় এখানে হেমন্ত আর বসন্তের এক ফিউশন হয়ে গেছে! আর কালারফুল ফিউশনের সাথে ছোট ছোট অনেকগুলো পাখি কিংবা প্রজাপতির প্যাটার্ন যেন না হলেই নয়! যা রান্নাঘরের মতো ছোট্ট ঐ ঘরটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে।
পাতার প্রিন্টের প্যাটার্ন- রান্নাঘরের দেয়ালের জন্য অফ হোয়াইট রঙের উপর পাতার প্যাটার্ন মানাবে বেশ। এক্ষেত্রে প্যাটার্ন বা মোটিফের জন্য একটু উজ্জ্বল রঙ বেছে নিলে তা দেখতে দারুণ দেখাবে। আর সাথে কেবিনেট এবং শেলফ যদি হয় লেকারের তবে দেয়ালের প্যাটার্নের সাথে মানাবে বেশ।
ধূসর রঙা ইল্যুশন- গতানুগতিক রঙ থেকে যদি আমরা একটু বের হয়ে আসি, তবে বলতেই হয় ধূসর কিংবা সাদা-কালোর ছকে আঁকা ইল্যুশন দেয়ালে বেশ ক্ল্যাসিক ভাব ফুটিয়ে তুলবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই যদি আপনি সাদা-কালো রঙ পছন্দ করে থাকেন, তবেই সিদ্ধান্ত নিবেন, নতুবা ভিন্ন রঙেই না হয় সাজবে আপনার রসুইঘরের দেয়াল।
রসুইঘরের দেয়াল সাজানোর চিন্তা তো তবে শেষ হলো, কিন্তু কিছু একটা কি বাদ পড়ে গেল না? হ্যাঁ, রঙিন প্যাটার্নে আঁকা দারুণ এই দেয়ালের গায়ে যদি ভুলবশত কোন দাগ বা ময়লা লেগে যায়, তবে উপায়? এত শখের সাজানো দেয়ালটা কি তবে ময়লা-দাগেই ঢাকা পড়ে থাকবে?
নাহ, তা তো হতে দেওয়া যায় না! অন্য ঘরের দেয়ালের মতো রসুইঘরের দেয়ালও যে থাকা চাই ক্লিন অ্যান্ড সাইন। আর তাই রঙ করার ক্ষেত্রে রসুইঘরের দেয়ালের জন্য বেছে নিতে পারেন বার্জারের ‘ইজি ক্লিন’। কাজ করতে গেলে দাগ-ময়লা তো লাগতেই পারে, আর এক্ষেত্রে ‘ইজি ক্লিন’-এর সুবিধা হলো, দাগটা কী ধরনের তার উপর নির্ভর করে সাবানের পানি, তারপিন তেল কিংবা শুধুমাত্র পানি ব্যবহার করেও দেয়ালের দাগ মুছে ফেলতে পারেন খুব সহজেই!
তবে আর দেরি কেন? পছন্দমতো প্যাটার্ন বেছে নিয়ে আজই রসুইঘরের দেয়াল সাজিয়ে নিন মনের মতো করে।