By Kazi Sadia Islam Roza
খুব অল্প কিছু পরিবর্তন যে কোন রুম-কে করে তুলতে পারে ‘নান্দনিক’। আপনাকে শুধু খেয়াল রাখতে হবে পরিবর্তনের উপাদান গুলো ঠিক হচ্ছে কি না। আপনার দিনের অবসর সময় হয়ত কাটে বই পড়ে, টিভি দেখে, সোফায় আরাম করে শুয়ে বা গান শুনে অর্থাৎ বেশির ভাগ সময় কাটে বসার ঘরে, লিভিং-রুমে। আপনার মন আর ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে তাই একটি নান্দনিক লিভিং-রুম হতে পারে আপনার প্রিয় কর্নার, পছন্দের সময় কাটানোর যায়গা।
আপনি কীভাবে আপনার ফার্নিচার সাজাচ্ছেন তার উপর অনেকটা নির্ভর করে লিভিং-রুমের সৌন্দর্য এবং ব্যবহার্য । যেমন- আপনার ফার্নিচার গুলো যদি সব টিভি কেন্দ্রীক না হয়ে ছড়িয়ে সাজানো হয় তাহলে রুমের মাঝে যায়গা বাড়ে। আপনার বাসায় কেউ বেড়াতে এলে বা পরিবারের সবাই মিলেও এই খালি যায়গায় বসে সময় কাটানো যায়। আপনার ফার্নিচার প্লেসমেন্টের উপর ঘরের ব্যাবহারেও পরিবর্তন হয়, ঘরের আলো ও রঙ আলাদা ভাবে সৌন্দর্য বর্ধনের সুযোগ পায়। টি-টেবিল, ছোট বুকশেলফ সব কিছু-কে হাতের নাগালে রাখাটাও জরুরি । এই ঘরের প্রথম উদ্দেশ্য ‘আরামদায়ক’ এই আবহাওয়া, আর তার জন্য যে কোন কিছু পরিবর্তন করে নিতে পারেন নিজের মত করে।
আপনার বসার ঘরের সাথে জানালা থাকলে সেখানের পর্দাটি হতে পারে অন্য ঘর গুলোর থেকে ভিন্ন। ঘরের দেয়ালের রঙ এর সাথে কম্বাইন করে ভিন্ন ভিন্ন প্যাটার্নের কাপড় আর স্কিম মিলিয়ে পছন্দ করুন আপনার পর্দা। ঘরের জানালায় প্যারাসাইট থাকতে পারে, ছোট বাতি ব্যাবহার করা যেতে পারে তবে সব সময় মিনিমাল একটা আয়োজন হলেই ভালো, এতে ঘরটাতে প্রশান্তি বেশি অনুভুত হবে।
ঘরের শোভায় ইলিউশন সব সময় একটি ক্লাসিক চয়েজ। পছন্দের রঙ আর ঘরের পছন্দের কর্নারের দেয়ালটি বেছে এখন খুব কম খরচেই করা যায় ইলিউশন পেইন্ট।
ড্রয়িংরুমের সিলিংয়ে যদি লাইট গ্রিন কিংবা ছাই রঙের ব্যবহার থাকে, তবে নির্বাচিত দেয়ালের ক্ষেত্রে ইলিউশন পেইন্ট হিসেবে, সেই রঙটিই ব্যবহার করা যায়। আবার ড্রয়িংরুমে স্ট্রাইপ কিংবা অপটিক পেইন্ট করানো যায় অথবা গাঢ় রঙের ওপর যেকোনো ইলিউশন হতে পারে। এতে ঘরের শোভা বৃদ্ধির সাথে সাথে আলোর-ও পরিবর্তন হবে। ইলিউশন যে কোন একটি দেয়ালেই বেশি ভালো মানায় তবে আপনি চাইলে কালার কম্বিনেশন করে দু দিকের দেয়ালেও করতে পারবেন। টিভি টাঙ্গানোর দেয়ালে ইলিউশন ব্যবহার করলে সেটি ঘরকে আকর্ষনীয় করে তোলে যেমন, তেমনি যদি আপনি সফট লাইটের ফোকাস ব্যবহার করেন তাহলে সেক্ষেত্রে ঘরটিকে একটি মায়াবী আভা ছড়িয়ে থাকবে।
দেয়ালে একটি আয়না, রিদমিক রঙের ব্যবহার, ইলিউশন পেইন্ট, আলোর ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার আপনার বসার ঘরের গভীরতা বাড়াতে পারে অনেকটা। এতে ঘরটা অনেক বেশি গ্রান্ডিওর অনুভূতি দেয় এবং ঘরজুড়ে থাকে আরামদায়ক আভাস।
ঘরটি আপনার নিজের, আপনার ব্যক্তিত্বের ছোঁয়া থাকলে সেটি হয়ে ওঠে সব থেকে আকর্ষনীয়। কুশন, কার্পেট, সিডি কর্নার, মানি প্ল্যান্ট, পছন্দের ল্যাম্প এই সব কিছু মিলিয়ে আপনি নিজের পছন্দ প্রকাশ করতে পারবেন আপনার ঘরের সাজে। ঘরের কর্নারে পটারিতে বড় গাছ, অন্য কর্নারে টেবিল ল্যাম্প, শতরঞ্জি, দেয়ালে আলোকচিত্র এবং নকশিকাঁথার ওয়ালমেট ঝুলিয়ে দিন। এই ছোট ছোট সব কিছু মিলিয়েই আপনার ঘরটি হয়ে উঠবে আপনার একটি অংশ।
বসার ঘরের আলোর ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘরকে ভালো করে আলো দিয়ে সাজান। টেবিল ল্যাম্প, ফ্লোর ল্যাম্প, হ্যাঙ্গিং লাইট সব দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজাতে পারলে ঘর দেখতে দুর্দান্ত লাগবে। তা ছাড়া ঘরের সঙ্গের লাগোয়া বারান্দা বা ভেন্টিলেটর দিয়েও আলোর ব্যবস্থা হবে। যত বেশি আলো তত বেশি ঘর প্রাণবন্ত থাকবে।
প্রতিদিনকার কাজের ক্লান্তি, যানজট, গাড়ির শব্দ, ধুলাবালু পেরিয়ে যখন কেউ ঘরে ঢুকবেন, তখন যেন তাঁর মনটা প্রশান্তিতে ভরে ওঠে, নিজের নিড়ে ফেরার আনন্দটি জড়িয়ে ধরে মিষ্টি করে।