By Sadia Islam Bristi
ঘরের দেয়ালে রঙ করতে গেলে রঙ মিস্ত্রির প্রয়োজন তো পড়বেই। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারিকালীন সময়ে রঙ মিস্ত্রিকে দিয়ে ঘর রাঙানোটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাহলে কি করবেন এসময়? হ্যাঁ, বাড়ির সবগুলো দেয়ালে রঙ করাটা বেশ কঠিন। বিশেষ করে সেটা যদি আপনি একাই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কেমন হয়, যদি বাড়ির প্রতিটি সদস্য ঘরের দেয়াল রাঙিয়ে তোলার এই কাজে হাত মেলায়? ঘরে অবস্থান করার এই অন্যরকম সময়ে বাড়ির দেয়ালে সবাই মিলে রঙ করা শুধু যে বাড়িকে দেখতে সুন্দর করে তুলবে তা নয়, একইসাথে পরিবারের প্রতিটি সদস্যই তাদের সময়টাকে অসম্ভব উপভোগ করবেন।
রঙ না হয় করবেন পরিবারের সবাই মিলে। কিন্তু ঠিক কিভাবে, কোন আকৃতি বা কোন ডিজাইনে রঙ করলে দেখতে ভালো লাগবে? এই প্রশ্ন আর চিন্তা তো থেকেই যায়। আর সেই চিন্তাই দূর করতে দেখে নিন ঘর রাঙিয়ে তোলার দারুণ কিছু আইডিয়া!
শুধু আপনি নন, আপনার বাসার ছোট্ট সদস্যও চমৎকারভাবে রঙ করতে পারবে এই পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে নিজের পছন্দমতো আকৃতির প্লাস্টিক বা শক্ত কাগজ নিয়ে সেটাতে নকশা কাটুন। এবার এই নকশাটি দেয়ালের সাথে ধরে রাখুন এবং রঙ স্প্রে করুন।
দেখুন না! কি অসাধারণ নকশা হয়েছে দেয়ালে। নিজের ঘরে কার্টুনগুলোও এভাবে দেয়ালে একে ফেলতে পারবে আপনার ছোট্ট শিশুটি!
আমাদের প্রত্যেকের ঘরেই নানারকম জিনিসপাতি খুঁজে পাওয়া যায়। সেটা হতে পারে চিরুণি, ব্রাশ কিংবা থালাবাসন পরিষ্কার করার স্পঞ্জ। এগুলোর প্রত্যেকটিই আপনার ঘরের দেয়ালে দারুণ নকশা আঁকতে সাহায্য করবে।
দেয়ালে চিরুণি ধরে সেটাতে রঙ স্প্রে করুন বা স্পঞ্জে রঙ মাখিয়ে সেটা দিয়ে দেয়ালে ছোপ এঁকে দিন নিয়মিত বিরতিতে। আর দেখুন! ঘরের কাজে ব্যবহৃত সাধারণ এই উপাদানেই আপনার ঘরের দেয়ালগুলো কি অসাধারণ হয়ে উঠেছে! বসার ঘর কিংবা শোবার ঘর – সবখানেই এই নকশা আঁকতে পারেন আপনি।
আপনার ঘরে মাস্কিং টেপ আছে তো? খুব সাধারণ এই মাস্কিং টেপ দিয়েই দারুণভাবে ঘরের দেয়াল রাঙিয়ে ফেলতে পারেন আপনি। তৈরি করতে পারেন নতুন নকশা।
এজন্য প্রথমে মাস্কিং টেপগুলো দেয়ালে আটকে ফেলুন। সেটা অবশ্যই আপনি যেমনটা নকশা চাচ্ছেন, তেমনভাবেই। এরপর টেপের উপরে রঙ স্প্রে করুন বা ব্রাশ দিয়ে পেইন্ট করুন। রঙ করা হয়ে গেলে মাস্কিং টেপ তুলে ফেলুন।
এবার দেখুন! কি অসাধারণ দেখাচ্ছে দেয়ালটাকে। বাড়তি কোন ঝামেলাই পোহাতে হবে না আপনাকে! মাস্কিং টেপের এই নকশা আপনার ঘরকে অন্য রকম এক সৌন্দর্য দেবে।
এবারের ডিজাইন পদ্ধতিটি আরো অন্যরকম। এজন্য আপনার দরকার পড়বে বাড়িতে ব্যবহার করা ঝাড়ু। প্রথমে ঘরের দেয়ালে ইচ্ছেমতো রঙ ঘষে নিন। এরপর রঙ শুকিয়ে যাওয়ার আগেই বাসায় ব্যবহৃত ঝাড়ু দিয়ে টানা লম্বা করে ঘষে দিন। এক্ষেত্রে আপনি শলাকা ঝাড়ুও ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যস! দেখুন। ঝাড়ুর মাধ্যমে খুব সহজেই কি সুন্দর একটা ডিজাইন হয়ে গিয়েছে আপনার সাদামাটা দেয়ালে।
এরপর দেয়ালে ঝুলিয়ে দিন নিজের বা প্রিয় শিল্পীর আঁকা ছবি।
পড়ার কিংবা শোবার ঘরের দেয়ালে নিজের পছন্দের কথাগুলো, উক্তি কিংবা একটা কবিতার লাইন তো এঁকে দেওয়াই যায়। আর সেটা শুধু পেইন্টার নয়, আপনার পক্ষেও খুব সহজেই করা সম্ভব।
ঘরের দেয়ালে রঙ করুন। এরপর মোটা কাগজে বড় করে লিখে আউটলাইন কেটে নিন। এরপর এটি দেয়ালে বসিয়ে তার ওপর রঙ করে নিন।
বাবল র্যাপিং পেপারের সাথে নিশ্চই পরিচিত আপনি? তবে এই র্যাপিং পেপারের বাবল নিয়ে খেলা করা ছাড়াও ঘর রাঙানোর কাজেও এটিকে ব্যবহার করতে পারেন আপনি। এজন্য প্রথমে একটি দেয়ালে পছন্দসই রঙ ব্যবহার করুন। এরপর সেটার উপরে বাবল র্যাপিং পেপার রাখুন।
হাত দিয়ে র্যাপিং পেপারের উপরে খানিকটা চাপ প্রয়োগ করুন এবং তারপর সেটাকে তুলে নিন। দেখুন! র্যাপিং পেপারের বাবলগুলো ঘরের দেয়ালেও জায়গা করে নিয়েছে।
পরিবারের সবার স্মৃতিগুলো দেয়ালে ধরে রাখতে চান? সেক্ষেত্রে সবচাইতে সহজ উপায়টি হলো দেয়ালে হাতের ছাপ ফুটিয়ে তোলা। কিচ্ছু করতে হবে না এজন্য। হাতগুলোতে রঙ মেখে দেয়ালে চেপে ধরুন। এই হাতের ছাপ সবসময় বাড়ির দেয়ালে টিকে থাকবে। ভাবতেই ভালো লাগছে! তাই না?
হয়তো দক্ষ কোন রঙ মিস্ত্রির কাজ হবে না। তবে হ্যাঁ, বাড়ির বদ্ধ পরিবেশে বসে না থেকে দেয়ালে রঙ করার এই উপলক্ষ্যটুকু শান্তি আর উচ্ছ্বাস বয়ে নিয়ে আসবে পরিবারের সব সদস্যের মনে। তাই আর দেরি কেন? উপরের আইডিয়াগুলো আর নিজের বুদ্ধি – দুটোকে মিলিয়ে ঘরের দেয়াল রাঙানোর কাজে লেগে পড়ুন এখনি!
1 Comment
আসলে আমি নতুন দেওয়ালে বার্জার লাগজারি পেইন্ট সিল্ক paint করতে চাচ্ছি !!
একা একাই সবাই মিলে রং করতে পারে তার সম্পূর্ণ প্রসেস বলে দিলে খুব ভালো হতো!!