By Tasnim Jarin
খেলতে খেলতে যদি সহজ কোন ক্রাফট বানানো শেখা যায়, তবে তো দারুণ হয়, তাই না? ঘরে পড়ে থাকা পুরনো বা অব্যবহৃত জিনিস দিয়েই কিন্তু বানানো যায় দারুণ সব ক্র্যাফট। যার মাধ্যমে একদিকে যেমন শেখাও হলো, অন্যদিকে ক্রিয়েটিভ কাজের সাথে যুক্ত থেকে বাচ্চারাও বিভিন্ন ক্র্যাফট বানানোর ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠে। আর তাই আজকের আয়োজন থেকে এমনই দারুণ কয়েকটি ক্রাফট মেকিং এর আইডিয়া এবং সেগুলো বানানোর উপায় নিয়ে চলুন জেনে আসা যাক।
পেপার বা কাগজের স্ট্রো দিয়ে ডেকোরেশন আইটেম যেমন ধরুন গার্লেনড বা মালা বানানো কিন্তু অনেক সহজ! কখনো বানানো হয়েছে কি?
অনেক বাচ্চাই পেপার স্ট্রো দিয়ে পানি বা জুস খেতে পছন্দ করে। ফলে ঘরের শেলফে কালারফুল পেপার স্ট্রো এর একটি প্যাকেট খুঁজে পাওয়া কিন্তু অস্বাভাবিক কিছু না। অল্প কয়েকটা স্ট্রো ব্যবহারের পর বাকি পড়ে থাকা স্ট্রোগুলোকে না হয় এবার কাজে লাগানো যাক।
পেপার স্ট্রো দিয়ে মালা বানানোর জন্য প্রয়োজন হবে- কালারফুল পেপার স্ট্রো, কাঁচি, সুঁই-সুতা এবং পম পম।
২০ থেকে ২৫টা পেপার স্ট্রো নিয়ে এগুলো অর্ধেক বা তার চেয়ে ছোট-বড় সাইজে কেটে নিতে হবে। এবার একটি মোটা সুঁই এবং সুতা নিয়ে এর মধ্যে স্ট্রোগুলো ছবিতে দেখানো নিয়মে ঢুকিয়ে নিতে হবে। অর্থাৎ, ৫টি স্ট্রো একসাথে অতঃপর কিছুটা খালি জায়গা, সেখানে পম পম বসবে, তারপর আবার ৫টি পেপার স্ট্রো, এভাবে করে বসালে পুরো মালাটি বানানো হয়ে যাবে।
এবার আপনি লিভিং এরিয়া, এন্ট্রেন্স, কিংবা বারান্দা বা আপনার পছন্দের যেকোনো জায়গায় মালার এই ক্রাফটটি ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
প্লাস্টিক মেটারিয়ালের ক্রোকেট বল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। কালারফুল এই বলগুলোকে যদি ক্যান্ডেল হোল্ডার হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তবে তা দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর দেখাবে। সাধারণত ক্যান্ডেল হোল্ডার হিসেবে আমরা কাঁচ বা মেটালের ফ্রেম ব্যবহার করি। তবে এক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ কিছু যদি বানানো যায়, তবে তো গ্রীষ্মের সময়টা আর বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে। তো, ক্রোকেট বল দিয়ে ক্যান্ডেল হোল্ডার বানানোর জন্য কী কী ধাপ অনুসরণ করবেন, চলুন জেনে নেয়া যাক!
ধরুন আপনি যদি ডাইনিং স্পেস সাজানোর কথা ভাবেন তবে টেবিলের মাঝে পছন্দের রঙের ৩টি ক্রোকেট বল ক্যান্ডেল হোল্ডার রেখে দিতে পারেন। রাতে কিংবা দিনের আয়োজনে যেকোনো সময়ই এগুলো টেবিলে নতুনত্ব আনবে।
তবে এটি বানানোও কিন্তু তেমন কঠিন কিছু নয়। এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ড্রিল মেশিন, মেটাল ওয়াসার, গ্লু এবং মোমবাতি।
প্লাস্টিকের ক্রোকেট বল নিয়ে এর নিচের অংশে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে নিন। মোমবাতির সমান মাপ দিয়ে ছিদ্র করে নিতে হবে, যেন মাপ বড়-ছোট না হয়। এবার ১ ইঞ্চি সমান একটি মেটালের ওয়াসার বলের নিচে গ্লু দিয়ে বসিয়ে দিতে হবে। এতে করে ক্যান্ডেল হোল্ডারটা খুব সহজে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় রোল করা যাবে বা নড়ানো যাবে। এই ধাপ গুলো অনুসরণ করা শেষ হয়ে গেলে এবার একটি মোমবাতি বসিয়ে দিলেই হয়ে গেল! ঘরের বিভিন্ন কর্নারে বা ডাইনিং টেবিলের উপর এবার প্লাস্টিকের ক্রোকেট বলগুলো রেখে দেখুন, দারুণ লাগছে, তাই না?
বাক্স বলতে আমরা সাধারণত কাঠ বা বোর্ডের কথা বুঝে থাকি। তবে বাসার পুরনো এনামেলের বেসিনও কিন্তু কাজে লাগানো সম্ভব। প্রথমে বেসিনটিকে বাগানের দেয়ালে সুবিধামত জায়গায় ফিট করে নিন। এবার বেসিনের মাঝে কাঠের একটি তক্তা বা পাটাতন বসিয়ে দিন। স্ক্রু দিয় শেলফটা ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। দেয়ালে লাগানো শেষে এবার এই বেসিনটি হয়ে যাবে বাগানের সরঞ্জাম রাখার চমৎকার একটি জায়গা।
তবে চাইলে এনামেলের বড় পাত্র গুলোতে চাইলে গাছও লাগাতে পারেন। সেক্ষেত্রে পাত্রের নিচের দিকে কয়েকটা ছিদ্র করে নিতে হবে যেন বাতাস-পানি চলাচলের ব্যবস্থা থাকে। বাগান করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো এবার শেলফে রেখে দিন। আরেক পাশে গ্লাভস, একটা ছোট প্ল্যান্ট পট ইত্যাদি রেখে দিন। আর হোস পাইপটি রাখুন বেসিনের বাইরের গোল অংশটি ঘিরে। ব্যাস কত সহজে আপনার বাগানের সরঞ্জাম রাখার জন্য দারুণ একটা ব্যবস্থা হয়ে গেল, তাই না?
এভাবেই গ্রীষ্মের এই সময়টাতে সহজ কিছু ক্রাফট মেকিং এর কাজ করে একদিকে ক্রিয়েটিভ কাজের মধ্য দিয়ে সময় যেমন কাজে লাগানো যাবে, তেমনি ঘরের অব্যবহৃত জিনিস দিয়ে দারুণ দারুণ সব জিনিসও বানানো যাবে।