By Sadia Islam
ঘরের দেয়ালে চুন-সুরকি করা হলো, রঙ করা হলো, কিছু বাড়তি আঁকিবুঁকিও হলো। কিন্তু তারপরেও, একটু কি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে দেয়ালটাকে? মনে হচ্ছে কী যেনো একটা নেই? ঠিক ধরেছেন! আপনার ঘরকে আর ঘরের দেয়ালকে সম্পূর্ণ একটা লুক দিতে এখন প্রয়োজন দারুণ কিছু ফটো ফ্রেম।
দেয়াল সাঁজাতে কোন ফটো ফ্রেমটা বাছবেন? চলুন, দেখে নেওয়া যাক ঘরের দেয়ালকে ফটো ফ্রেম দিয়ে সাজানোর দারুণ কিছু আইডিয়া।
না, ‘কাভি খুশি খাভি গাম’এর সেই বিশাল পারিবারিক প্রতিকৃতির কথা বলছি না। তবে ইচ্ছে করলেই পরিবারের সদস্যদের ছোট এবং মাঝারী আকৃতির কয়েকটি পেইন্টিং প্রতিকৃতি একসাথে রাখতে পারেন। বসার ঘরের দেয়ালে মানালেও শোবার ঘরেও ফ্রেমগুলো রাখতে পারেন আপনি।
সিঁড়ি থেকে নীচে নামার সময় সামনের দেয়ালটাকে বড্ড ফাঁকা লাগে? আপনার যত স্মৃতি, যত ছবি- সবগুলো দিয়ে ভর্তি করুন সামনের দেয়ালটিকে। প্রতিবার সিঁড়ি দিয়ে নামার বা ওঠার সময় দারুণ সেই সময়গুলো চোখের সামনে চলে আসবে। ভাবতেই ভালো লাগছে, তাই না?
পড়ার ঘর বা খাবার ঘর- টেবিলের ঠিক পাশের দেয়ালে জায়গাটা ফাঁকা থেকে যায়। এমন নয় যে, আপনাকে পরিচিত কোন মানুষের বা জিনিসের ছবি সেখানে রাখতে হবে। খাবার, কোন দর্শনীয় স্থান আর রঙ্গিন কিছু ছবি ঝুলিয়ে ফেলুন দেয়ালে। রাখতে পারেন পছন্দের চলচ্চিত্রের পোস্টার বা বইয়ের প্রচ্ছদটিও। আর টেবিলটা যদি পড়ার টেবিল হয়, তাহলে টেবিলের ঠিক উপরের ফাঁকা অংশটায় পছন্দের কোন উক্তি বা কবিতা ক্যালিওগ্রাফি করে লিখে ফ্রেমবন্দী করতে পারেন। ঘরের চেহারাটাকেই পুরোপুরি বদলে দেবে এই কয়েকটি ছবি।
ঘর থেকে রান্নাঘরে যেতে কিছুটা লম্বা আর সরু জায়গা রয়েছে? সেখানে বন্ধু এবং অন্যদের জন্য কিছু পারিবারিক ছবি রাখুন। এতে করে রান্নাঘর পর্যন্ত তাদের যাওয়ার সময়টাতেও দারুণ কিছু অভিজ্ঞতা থাকবে।
সব রঙয়ের ফ্রেম সব দেয়ালের সাথে মানায় না। কেমন হয়, যদি আপনার ঘরের একেকটি অংশে একেক রকম রঙ করা থাকে? বার্জার পেইন্টের দারুণ সব অপশন রয়েছে, যেগুলো আপনাকে চারটি রঙয়ের দেয়াল উপহার দেবে। ফলে প্রতিটি রঙ্গিন অংশে সেটার সাথে মানানসই এমন ফ্রেম এবং ছবি রাখতে পারেন আপনি সহজেই। এছাড়া, ইচ্ছে হলে বসার ঘরের দেয়ালটায় বিশাল এক গাছ এঁকে, সেটার একেকটা ডাল আর শাখা-প্রশাখায় পরিবারের সদস্যদের ছবি ঝুলিয়ে নিতে পারেন। তাহলে খুব চমৎকারভাবে সহজেই তৈরি হয়ে যাবে ‘ফ্যামিলি ট্রি’!
সাদা দেয়ালে ছবির ফ্রেম রাখতে চান, কিন্তু একটু ভিন্নভাবে? তাহলে এবার একটু অন্যকিছু হয়ে যাক! কাঠ বা যেকোনো ধাতুর তৈরি শোকেস দেয়ালে সংযুক্ত করুন। এবার শোকেসের একেকটি খোপে একেকটি ছবি রাখুন। ইচ্ছে করলে শোকেসের ভেতরে কয়েকটা পুতুল বা অন্য ঘর সাজানোর জিনিসও রাখতে পারেন আপনি। আর প্রতিটি ছবির উপরে, খোপের ছাদে ছোট্ট একটা লাইট লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে করে আলোটা সরাসরি সেই ছবিতেই পড়বে। ঠিক এভাবেই নানারকম মানানসই আলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন যেকোনো ছবির উপরে!
বাজারে নানারকমের ছবির ফ্রেম দেখতে পাবেন আপনি। এখন আপনাকেই বেছে নিতে হবে যে, কোন দেয়ালে এবং কোন স্থানে কোন ফ্রেমটি ব্যবহার করবেন।
ফ্রেমের ধরণঃ বাজারে কাঠ, বেত, মাটি, বাঁশ, সিরামিক, প্লাস্টিক এবং নানারকম ধাতব ফ্রেম পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় হলো কালো, খয়েরী ও সাদা রঙ। আর ফ্রেমের মধ্যে কাঠের ফ্রেমটাই এখন চলছে বেশি।
কোথায় পাবেনঃ যেকোনো সুপার শপ বা বাহারি উপহারের দোকানে গেলেই ছবির ফ্রেম কিনতে পারবেন আপনি। তবে সবচাইতে ভালো মানের ফ্রেম কম খরচে পেতে ঘুরে আসতে পারেন এলিফেন্ট রোড, নিউমার্কেট, দোয়েল চত্বর ইত্যাদি স্থানে।
দাম কেমনঃ আপনি কোন উপাদানের ফ্রেম কিনছেন তার উপরে নির্ভর করবে ছবির ফ্রেমের দাম। কাঠের ফ্রেম ৬০০ টাকা থেকে হাজার ১২০০- র মধ্যেই পেয়ে যাবেন। ভারী ধাতব অ্যান্টিক ফ্রেম কিনতে গেলে হাজার টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হবে পারে। প্লাস্টিকের ফ্রেম বেশ সস্তায়, ৩০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। মোটকথা, ৩০০ টাক থেকে ৮,০০০ টাকার মধ্যেই পছন্দসই ছোট ও বড় ছবির ফ্রেম কিনতে পারবেন আপনি।
ছবির ফ্রেম সবসময় ঘরে বাড়তি জীবন্ত ভাব এনে দেয়। আপনার ঘরেও কি এমন একটা প্রাণবন্ত ভাব আনতে চান আপনি? তাহলে আর দেরি কেন! এবার তাহলে ঘর সাজুক ছবির ফ্রেমে!