ঘরের সাজে মিনিমালিস্টি ফার্নিচার - Berger Home Diaries
parallax background

ঘরের সাজে মিনিমালিস্টি ফার্নিচার

By Tasnim Jarin

ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে একেকজনের পছন্দ হয় একেক ধরনের স্টাইল। কারো হয়তো পছন্দ কারুকাজ করার কাঠের ফার্নিচার, কেউ হয়তো সিম্পল ডিজাইনের বেতের ফার্নিচার পছন্দ, কিংবা কেউ আবার কালারফুল ফেব্রিক দিয়ে ডিজাইন করা ফার্নিচারই মনে করে পারফেক্ট। ব্যক্তি বিশেষে পছন্দ একেকজনের একেক ধরনের হয়। সাধারণ জীবনযাপনকেও অনেকে বেছে নেন ঘর সাজানোর ক্ষেত্রেও।  

আর এই সাধারণ জীবনযাপন থেকেই অল্প কিছু আসবাব দিয়ে ঘর সাজানোর এই প্রথাটিও এখন বেশ প্রচলিত। যাকে বলা হয় মিনিমালিস্ট ডেকোর স্টাইলে ঘর সাজানো। অর্থাৎ হোম ডেকোরে এই স্টাইলে খুব বেশি ফার্নিচার ব্যবহার করা হয় না। বরং, যেই ফার্নিচার না হলেই না, শুধু সেগুলো দিয়েই ঘরের ইন্টেরিয়র সাজানো হয়। আর তাই মর্ডান ইন্টেরিয়র ডিজাইনে এই মিনিমালিস্ট স্টাইলের বিশেষ চাহিদা লক্ষ্য করা যায়।  

A picture containing indoor, wall, floor, living
Description automatically generated

মিনিমালিস্ট ডেকোর

খুব সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, মিনিমালিস্ট ডেকোরের মাধ্যমে সামান্য কিছু ফার্নিচার ব্যবহার করে অন্দর সাজানো হয়। জাঁকজমকপূর্ণ বা ভারী ডিজাইনে করা ফার্নিচার, কালারফুল ফেব্রিক এর ব্যবহার এই স্টাইলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। বরং এর বদলে খুবই সিম্পল এবং সাদামাটা ফার্নিচার যার সৌন্দর্য ঘরকে আরও ফুটিয়ে তুলে এমন কিছুর ব্যবহার এখানে লক্ষ্য করা যায়।  

ঘর সাজানোর সময় সব ধরনের ভারী এবং কমপ্লিকেটেড আইডিয়া বাদ দিয়ে ঘরকে যত সুন্দর করে তোলা যায়, ততই ঘরের আবহে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মিনিমালিস্ট ডিজাইনে, যত সহজভাবে ঘরকে দেখা যাবে, ততই এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ হবে। ঘরে প্রচুর জায়গা থাকলেও তাই আসবাব কম ব্যবহার করা হবে। এই স্টাইলের প্রভাব থাকে হোক ঘরের রঙ, পর্দায় এবং যেকোন আসবাবে। আর তাই দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিলে যায়  এমন জিনিস থাকা মানেই মিনিমালিস্ট ডেকোর স্টাইল।  

যেমন ধরুন- আপনি এমন একটি সোফা কিনলেন যা বিছানা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। দেখতে সোফা মনে হলেও আদতে সেটিকে বিছানা হিসেবেও রূপান্তরিত করা যায়। এমন ফার্নিচারে জায়গা যেমন কম লাগবে, তেমনি প্রয়োজন শেষে বিশাল বিছানাটি আপনি গুটিয়ে রাখতে পারছেন। এতে করে ঘরে স্পেস তৈরি হচ্ছে, যা মিনিমালিস্ট ডেকোরের অংশ হিসেবে পরিচিত।  

A picture containing floor, wall, indoor, furniture
Description automatically generated

মিনিমালিস্ট ডেকোরে সাধারণত সাদা, ধূসরগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়। দেয়ালের রঙ, সোফার ফেব্রিক, শো-পিস ইত্যাদি সব কিছুতেই তাই এই রঙের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই রঙগুলোর কন্ট্রাস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট কোন দেয়াল, জায়গা বা শোপিস হলুদ, কালো বা নীল রঙের হয়ে থাকে। তবে এই শেডগুলোতে চাকচিক্য তো মোটেই থাকে না, বরং এক ধরনের ম্যাট লুক দেয় পুরো ঘর জুড়ে।       

এই স্টাইলে সাধারণত কাঠের একেবারে সিম্পল দেখতে ডিজাইনে ডাইনিং টেবিল-চেয়ার, শেলফ বা অন্যান্য ফার্নিচার এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে এসব কিছু কিন্তু দেখতে একেবারেই সিম্পল ফরম্যাটে করা হয়, যেখানে হাইলাইটেড হবে এমন কিছু রাখা হয় না। 

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল ঘরে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা। যেহেতু আইডিয়াটাই হল মিনিমালিস্ট, তাই ঘরে যত ফাঁকা স্পেস থাকবে, ততই যেমন ভাল, তেমনি এর ফলে ঘরে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারবে, এ ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে হবে।  

আরেকটি উল্লেখ করার বিষয় হল ঘরে সবুজের অবস্থান। অর্থাৎ, ঘরের ভেতর রাখতে হবে গাছপালা, যেন ঘরে প্রাকৃতিক আবহ তৈরি হয়। ধূসর বা সাদা রঙের সাথে সবুজের কম্বিনেশন এমনিতেই বেশ দারুণ হয়। আর তাই ঘরের যেখানেই সম্ভব রাখতে হবে সবুজের উপস্থিতি। মিনিমালিস্ট ডেকোরের সার্থকতা এই জায়গাতেই ফুটে উঠবে আরও দ্বিগুণভাবে।

এছাড়া বেড রুমের কোণে একটি আরামদায়ক চেয়ার, ছোট একটি রিডিং স্পেস, যেখানে থাকবে গাছ। আর এর পাশাপাশি বিছানা আর একটি কাপড় রাখার স্পেস, ব্যাস আর কী প্রয়োজন সাধারণ জীবনযাপনের জন্য। এক্ষেত্রে ঘরে অতিরিক্ত আয়নার ব্যবহার করা হয় না। তবে কর্নার বুঝে সিম্পল ডিজাইনের ল্যাম্প রাখা যেতে পারে।   

A picture containing floor, indoor, wall, room
Description automatically generated

অন্যদিকে ড্রয়িং এবং ডাইনিং এর সাজে প্রয়োজনীয় ফার্নিচার যেমন- সোফা, টেবিল, টিভির ক্যাবিনেট, ল্যাম্প ছাড়া সাধারণত আর তেমন কিছুই ব্যবহার করা হয় না। তবে আপনি চাইলে যেকোনো একটি কর্নারকে কমফোর্টেবল করে তুলতে কিছু থ্রো পিলো ব্যবহার করতে পারেন। আর এর সাথে সবুজ গাছ আর কিছু বই, মিনিমালিস্ট লাইফস্টাইলের জন্য এটুকুই যেন বেশ।      

আর তাই সাদামাটা এবং অল্প ফার্নিচারে ঘর সাজাতে এবং প্রকৃতির আবহ ঘরে ধরে রাখতে মিনিমালিস্ট স্টাইলে অনেকেই ঘর সাজাতে পছন্দ করে। এতে অতিরঞ্জিত জিনিসের ব্যবহার যেমন একেবারেই হয় না, তেমনি সিম্পল ডিজাইন বা স্টাইল হওয়া সত্ত্বেও শৌখিনতা এবং রুচিবোধের দারুণ প্রকাশ ঘটে মিনিমালিস্ট ডেকোর স্টাইলে।   

  •  
  •  
  •  
  •   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *