সোনামণির প্রথম জন্মদিন - Berger Home Diaries
parallax background

সোনামণির প্রথম জন্মদিন

By Tasnim Jarin

বাসার সবচেয়ে ছোট এবং আদুরে সদস্যের জন্মদিন, তাও আবার প্রথম জন্মদিন, স্পেশাল তো হবেই! হাঁটি হাঁটি পা পা করে দিন, মাস পেরিয়ে কখন যে এক বছর হয়ে গেল, সেটা ভাবতেই হয়তো অবাক লাগবে। আর এক বছর পূর্ণ হওয়া মানে তো বড় হয়ে যাওয়া, যা পরিবারের সবার জন্য তো বটেই, মা-বাবার জন্য যেন সবচেয়ে বিশেষ একটি দিন। কেননা, সুস্থতার সাথে নিরাপদ ভাবে বেড়ে ওঠার এই যাত্রায় তাদের প্রার্থনা এবং ভালোবাসা দুটোই যে হয় সীমাহীন। তাই এক বছর পূর্ণ হওয়ার খুশিতে জন্মদিন উদযাপনের আয়োজনটাও যে হওয়া চাই প্ল্যান অনুযায়ী পারফেক্ট।

first-birthday-balloons-wide-2_x1600.jpg

তবে জন্মদিনের প্ল্যান করার সময় যে কথাটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে, তা হল যেহেতু শিশুর বয়স মাত্র এক বছর পূর্ণ হল, তাই জন্মদিন আয়োজনের কোন কিছুই আসলে সে বুঝতে পারবে না। তাই উত্তেজনায় এমন কিছুর প্ল্যানও করা যাবে না, যেন শিশুটি অস্বস্তিবোধ করে এবং কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। এতে করে মুড যেমন খারাপ হয়ে যাবে, তেমনি পুরো আয়োজনের মজাটাই হয়তো আর থাকবে না। তাই সোনামণির প্রথম জন্মদিনের আয়োজনটা হওয়া চাই মার্জিত এবং ছিমছাম একটি অনুষ্ঠান।       

জন্মদিনের আয়োজনের জন্য প্ল্যানটা কীভাবে করবেন? চলুন জেনে নেয়া যাক। 

জন্মদিনের থিম

যেহেতু প্রথম জন্মদিন তাই কত কিছুই না করতে ইচ্ছা করবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে রেস্টুরেন্ট বা কোন হল বুক করে বার্থডে পার্টি না করে বাসায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করাটাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। তাই সবার প্রথম জন্মদিনের জন্য একটি থিম ঠিক করে নিতে হবে। ছেলে বা মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে থিম নির্ধারণে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে ছোট্ট এই শিশুটি তো কিছুই বুঝতে পারবে না, তাই যেই থিমই থাকুক না কেন, এটি মূলত আয়োজনটা দারুণ করার জন্য। সেক্ষেত্রে বাটারফ্লাই, ফ্লোরাল, গাড়ি, ডিজনি ক্যারেক্টার অথবা শুধুমাত্র দারুণ কিছু কালার থিমে প্ল্যান করা যেতে পারে। যেমন- গোল্ডেন, সিলভার, পিংক-হোয়াইট, ব্লু-হোয়াইট, রেড বা যেকোনো নিয়ন রঙের থিম হতে পারে।   

জন্মদিনের পোশাকটা কেমন হবে?

থিমের সাথে মিল রেখে জন্মদিনের মূল পোশাকটা পার্টিতে পরার মতো ফ্যান্সি টাইপ হবে এমনটা স্বাভাবিক। তবে এর পাশাপাশি আরও এক-দুইটা আরামদায়ক পোশাক রাখতে পারেন, যেন পার্টি ড্রেসটা পরে থেকে অস্থির হয়ে গেলে যেন চটজলদি বদলে দেয়া যায়। বেশি গরম এবং হঠাৎ করে অনেক মানুষ দেখলে বাচ্চারা সাধারণত একটু বিরক্ত হয়ে যায়, তাই তাদের আরামের দিকটাও প্রাধান্য দিতে হবে। 

কেকের ডিজাইন এবং সাইজ

কেকের ডিজাইন এর সাথে জন্মদিনের থিমের অবশ্যই মিল থাকতে হবে। বাটারফ্লাই বা গাড়ি থিম হলে, ডিজাইন পছন্দ করে কাস্টমাইজড কেক অর্ডার করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি কেক বেক করতে পারেন তবে তো নিজেই ডিজাইন করে বাসায় কেক বানিয়ে ফেলতে পারেন। ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি ফ্লেভার বা চকোলেট, যেকোনটি বেছে নিতে পারেন। যেহেতু জন্মদিনের কেক মূলত বাসার মানুষ এবং অতিথিদের জন্য, তাই স্পেশাল এই দিনে বাবা-মা তাদের পছন্দের ফ্লেভার কিংবা ডিজাইনের কেকও অর্ডার করতে পারেন। কেননা এটি যে তাদের জন্য অনেক অনেক আনন্দের একটি দিন।

জন্মদিনে ঘরের ডেকোরেশন

জন্মদিনের ডেকোরেশন মানেই হল বিভিন্ন রঙ এবং ডিজাইনের বেলুন থাকা চাই-ই চাই। আর কিছু বুঝুক বা না বুঝুক, বাচ্চারা বেলুন নিয়ে খেলতে অনেক পছন্দ করে। আর তাই দেয়াল ডেকোরেশনে বেলুন ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ফ্লোরেও বেশ কিছু বেলুন ছড়িয়ে রাখতে পারেন, যা ছবিতে দেখতেও সুন্দর দেখাবে। এছাড়া কিছু হোমমেইড ক্রাফটও বানিয়ে রাখতে পারেন আগে থেকেই। যেমন আর্ট পেপারে হ্যাপি বার্থডে এবং নাম ও বয়স লিখে তা রঙ করে দেয়ালে এঁটে দিতে পারেন। এছাড়া গোল্ডেন বা সিলভার পেপার দিয়ে স্টার, অরিগামি, ফ্লাওয়ার ইত্যাদি বানিয়ে নিতে পারেন।  

মেহমানদের খানাপিনা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান মানেই হল মেন্যুতে মজার সব খাবার থাকা। মেইন মেন্যুতে পরোটা-নান, বিরিয়ানি, পোলাও-রোস্ট এর পাশাপাশি ডেজার্ট এর জন্য চকোলেট মাফিন, ডোনাট, মিষ্টি এবং ঝাল জাতীয় আইটেম এর জন্য কাবাব, ভেজিটেবল রোল, চিকেন নাগেট ইত্যাদি রাখতে পারেন।

সোনামণির জন্য উপহার

Cloth-Books_Header-Image.jpg

জন্মদিন যেহেতু, তাই উপহার হিসেবে সোনামণি তো অনেক কিছু পাবেই, সেটাই স্বাভাবিক। তবে বাবা-মা হিসেবে আপনিও হয়তো বিশেষ কিছুর প্ল্যান করতে পারেন। সেটা হতে পারে সোনামণির ভবিষ্যৎ এর জন্য নতুন একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা যেখানে এখন থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমাবেন বা তার জন্য ইনস্যুরেন্স প্ল্যান, এটাই হবে জন্মদিনের উপহার। এছাড়া খেলনা, পোশাক বা অন্য কিছু তো সারা বছরই দেয়া হয়, তবে জন্মদিন উপলক্ষ্যে স্পেশাল কিছু করলে কেমন হয়?   

স্পেশাল ফটোসেশন

21.jpg

জন্মদিনের অনুষ্ঠান, তাও আবার প্রথম, স্মৃতি ধরে রাখতে তাই ফটোসেশনও হওয়া চাই দারুণ করে। আর এ কারণে শিশুর মুড যখন ভালো থাকবে অর্থাৎ হাসিখুশি থাকবে তখন নিজেরাই বা কোন ফটোগ্রাফার বন্ধুর সাহায্য নিয়ে মুহূর্তটাকে ক্যামেরাবন্দী করতে ভুলবেন না যেন! অনেক সময়ই দেখা যায় জন্মদিনের দিন অনেক মানুষ আর এত মানুষ দেখে বাচ্চাদের মন ভালো থাকে না, প্রচুর কান্নাকাটিও করে। তাই আগে থেকেই ভালো ঘুম হওয়া প্রয়োজন আর প্রতিদিনের রুটিনেও যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

যেকোনো জন্মদিনের আয়োজনই আনন্দের। আর সেটা যদি হয় প্রথম জন্মদিন, তবে যেন সেই আনন্দে যোগ হয় নতুন এক মাত্রা। বাবা-মা এবং পরিবারের বাকি সবার সাথে সোনামণির জন্মদিনের এই মুহূর্তটা বিশেষ করে তুলতে তাই প্রস্তুতিও নেয়া চাই আগে থেকেই, যেন শেষ মুহূর্তে কোন কিছু বাদ থেকে না যায়।  

  •  
  •  
  •  
  •   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *