শীতের আগমনের আগেই হোক পিকনিকের আয়োজন - Berger Home Diaries
parallax background

শীতের আগমনের আগেই হোক পিকনিকের আয়োজন

By Tasnim Jarin

কর্মব্যস্ত জীবনে একটু ঘোরাঘুরি, একটু আড্ডা দেয়ার সময় আমাদের অনেকেরই হয়ে ওঠে না। ফলে প্রতিদিনের জীবনটা অনেক ক্ষেত্রেই বেশ যান্ত্রিক মনে হয়। আর এই ব্যস্ত জীবনকে কিছুটা প্রাণচঞ্চল করতে পরিবারের সাথে, বন্ধুরা মিলে, কিংবা সহকর্মীরা মিলে ছোটখাটো একটা পিকনিকের আয়োজন করতে পারেন। এতে করে মন যেমন রিফ্রেশ হবে, তেমনি কাজের গতিও বাড়বে নিশ্চিত। কেননা, কাজের ব্যস্ততায় আমরা অনেক সময়ই মানসিক স্বাস্থ্য এবং প্রশান্তির মতো বিষয়গুলোকে এড়িয়ে চলি। আর তাই শীত আসতে যেহেতু খুব বেশি বাকি নেই, তাই এর মধ্যেই একটি পিকনিকের আয়োজন করে নিতে পারেন বাসার ছাদে কিংবা শহর থেকে কিছুটা দূরে ছিমছাম কোন রিসোর্টে।

পিকনিক স্পট

পরিবার কিংবা বন্ধুরা মিলে দারুণ কিছু মুহূর্ত উপভোগ করতে চলে যেতে পারেন ঢাকার আশেপাশে গাজীপুরের রিসোর্টগুলোতে। ভাওয়াল, ছুটি, সারাহ, রাজেন্দ্র ইকো, নক্ষত্রবাড়ির মতো রিসোর্টগুলো ঢাকা থেকে খুব বেশি দূরে না হওয়ায় গাড়ি কিংবা বাস ভাড়া করে সারাদিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন। সপ্তাহের ছুটির দিন থেকে নির্দিষ্ট একটি দিন বেছে নিয়ে পিকনিকের পরিকল্পনা করে নিন তাই আগেভাগেই। তাই পিকনিকে যাওয়ার তারিখ নির্ধারণ করার সাথে সাথেই সরাসরি রিসোর্টে ফোন দিয়ে জায়গাটি বুকিং দিয়ে দিন।

তবে পিকনিক করতে যে রিসোর্টেই যেতে হবে, এমনটাও কিন্তু নয়। বাসার সামনের বাগানে কিংবা ছাদে যদি খোলামেলা জায়গা থাকে, তবে পিকনিকের আয়োজনটা না হয় সেখানেই করে নিন। কালারফুল কিছু পেপার ক্র্যাফট, ফ্লোর ম্যাট, কুশন, থ্রো পিলো দিয়ে ছাদের নির্দিষ্ট জায়গার ডেকোর করে নিন। বাচ্চাদের জন্য বেলুন এর ব্যবস্থা করতে পারেন পিকনিক স্পটে।  

পিকনিকের থিম

শীতের আগে হেমন্তের সময় প্রকৃতি যেন তার ভিন্ন এক রূপ নিয়ে হাজির হয় বরাবরের মতোই। বাদামী, কমলা আর সবুজের মিশ্রণে প্রকৃতি এ সময় থাকে শীতের আগমনের অপেক্ষায়। রঙিন সব ফুল-পাতাদের সাথে মিল রেখে তাই পিকনিক আয়োজনের থিমটাও রাখতে পারেন বাদামী কিংবা কালচে কমলা রঙে। এমনকি ড্রেসের কালার হিসেবেও বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল কোন রঙ। 

পিকনিকে গানের আসর, মজার গেমস, সাথে খাবারের আয়োজনের জায়গাটা এই থিমে সাজিয়ে নিতে পারেন। গল্প-আড্ডায় পিকনিকের পুরো সময়টা আনন্দে কাটাতে পুরো আয়োজনে বিভিন্ন ধরনের গেমসের আয়োজনও করতে পারেন। ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি খেলার আয়োজনে বড়দের পাশাপাশি বাচ্চারাও বেশ আনন্দ পাবে।

আর এই পুরো আয়োজনটাকে আরও প্রাণবন্ত করতে গিটার, উকুলেলে, হারমোনিকা কিংবা বাঁশির মতো সহজে বহন করা যায় এমন বাদ্যযন্ত্র পিকনিক স্পটে নিয়ে যেতে পারেন। তবে পিকনিকের আয়োজন যদি বাসার ছাদে করা হয়, সেক্ষেত্রে তো আরও ভালো। এক্ষেত্রে ছাদে ইলেক্ট্রিকাল কিবোর্ড, গিটার কিংবা স্পিকারের ব্যবস্থাও করতে পারেন। তবে বিদ্যুতের কানেকশন ঠিকঠাক মতো আছে কিনা, তা আগে থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

পিকনিকের আয়োজন মানেই অনেক ধরনের খাবার যেন থাকতেই হবে। আর তাই স্যান্ডউইচ, ফল, জুস, ডেজার্ট, চিপস, ড্রাই ফ্রুট সহ মজার সব খাবার রাখতে পারেন পিকনিকের তালিকায়। এছাড়া মোরগ পোলাও, কাচ্চি, কিংবা পিজ্জা-পাস্তা, কাবাব, নান-কোরমার আয়োজন করতে পারেন দুপুরের খাবারের জন্য। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কুকিস, চকোলেটও পিকনিকের আয়োজনে রাখতে পারেন।

তবে পিকনিকের আয়োজন যদি বাসার বাইরে করার পরিকল্পনা থাকে, সেক্ষেত্রে খাবার নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট বড় সাইজের কয়েকটি ঝুড়ি কিনে নিন। আর পুরো আয়োজনের পরিকল্পনা করে ফেলুন পরিবারের সবাই কিংবা বন্ধুরা মিলে। তবে পিকনিকে যা যা দরকার তার একটা তালিকা করতে ভুলবেন না যেন!

শীতের আগমনের আগেই যদি সবাই মিলে কিছুটা সময় গল্পে-আড্ডায় আনন্দে কাটাতে চান, তবে পিকনিকের চেয়ে দারুণ কিছু আর কী হতে পারে। আর তাই হেমন্তের এই সময়ে পিকনিকের পরিকল্পনা করে ফেলুন সবাই মিলে।

  •  
  •  
  •  
  •   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *