By Tasnim Jarin
পৌষ সংক্রান্তি, ঘুড়ি উৎসব কিংবা সাকরাইন, যে নামেই বলা হোক না কেন, এটি পরিচিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন উৎসব হিসেবে। পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসব বাংলাদেশের শীত মৌসুমের বাৎসরিক উদযাপন। ঘুড়ি উড়ানো, আলোকসজ্জা, আতশবাজি এবং ফানুস উড়ানোর মধ্য দিয়ে এই দিনটি পালন করা হয়। তবে পুরান ঢাকার এই উৎসব এখন পালন করা হয় শহরের বিভিন্ন জায়গা জুড়ে। পৌষ সংক্রান্তি ও মাঘ মাস শুরুর প্রথম প্রহরে অর্থাৎ, ১৪ জানুয়ারি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই দিনটি পালিত হয়। এদিন পুরান ঢাকার আকাশ দিনভর ঢেকে যায় হরেক রঙের ঘুড়িতে। আর সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি চলে আকাশ রঙিন করে তোলা আলোকসজ্জা এবং আতশবাজির উৎসব।
পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, লালবাগ ও এর আশেপাশের এলাকাগুলো সাকরাইনের দিন যেন ভিন্ন এক রূপ ধারণ করে। উৎসবের এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে ভেদাভেদ ভুলে। বাড়ির ছাদে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে চলে ঘুড়ি উড়ানো। উৎসবের এই আনন্দকে দ্বিগুণ করতে আয়োজন করতে পারেন বন্ধুদের বা ভাই-বোনদের সাথে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতায় যার ঘুড়ি সবচেয়ে বেশিবার কাটা পড়বে, সেই হয়ে যাবে বিজয়ী। গতানুগতিক নিয়মকে একটু ঘুরিয়ে ফেলুন, বেশ মজারই হবে, তাই না?
এছাড়া বাসার ছাদে আয়োজন করতে পারেন ছোটখাটো গেট-টুগেদার অনুষ্ঠান। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের মানুষের সাথে আলোর শহরের এই রাতে গল্প-আড্ডায় বেশ দারুণ কিছু মুহূর্ত কাটাতে এর চেয়ে দারুণ আর কিই বা হতে পারে। আর শীতের এই সময়টাতে গেট-টুগেদার অনুষ্ঠানে যদি বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করা যায়, তবে তা জমেও উঠবে বেশ। আর তাই সাকরাইনের আয়োজনে বারবিকিউ পার্টির প্রস্তুতি নিতে পারেন।
সাকরাইন যেহেতু শীতের সময় উদযাপন করা হয়, তাই শীতের পিঠাপুলির জন্য আয়োজনে ভিন্ন একটা জায়গা রাখতে পারেন। আর সেই সাথে ছাদের কর্নারে একটি চা-কফি কর্নারও সাজিয়ে নিতে পারেন। হিম হিম শীতে চা-কফির কর্নারটা নিঃসন্দেহে বেশ জমে উঠবে। অন্যদিকে গানের আসরের জন্য ছাদের কর্নার সাজিয়ে নিতে পারেন। চা কফি কর্নারের পাশেই বেশ কিছু চেয়ার আর একটি ম্যাট্রেক্স বা ম্যাট বিছিয়ে নিয়ে, তার উপর কিছু কুশন রাখতে পারেন। এবার প্রয়োজনীয় ইন্সট্রুমেন্ট যেমন গিটার, কিবোর্ড রেখে দিন, ব্যাস যখন যার ইচ্ছা সেই এই গানের আসরে যুক্ত হতে পারবেন।
সাকরাইন উৎসবে চারিদিকে চলতে থাকে অনেক ধরনের আয়োজন। আলোকসজ্জা, গান এবং ঘুড়ি উড়ানোর এই উৎসবে রাত জুড়ে চলে উদযাপন। আর এই উৎসবের আনন্দ তখনই দ্বিগুণ হয়ে যায় যখন আশেপাশে থাকে সব পরিচিত মুখ। রঙিন এই উৎসবটি যেন হয়ে উঠে আরও রঙিন।