By Kazi Sadia Islam Roza
বর্তমানে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না, বন্ধ হয়ে আছে জীবনের সব স্বাভাবিক কাজ। এই সময়ে পরিবারই একমাত্র বন্ধু, আড্ডার সঙ্গী। পরিবারের সাথে একান্ত কিছু সময় কাটাতে ভালো লাগে আমাদের সবার। সারাদিনে বাসার সব কাজ আর হোম অফিসের ঝক্কি-ঝামেলা শেষে সন্ধ্যার চায়ে সবাই মিলে এক সাথে চুমুক দেওয়ার মাঝে আনন্দ এবং আন্তরিকতা দুটোই আছে। পরিবারের সাথে আড্ডার মাঝে কাটানো সময়টাকে আনন্দময় করে তুলতে হালকা করে অনেক কিছুরই আয়োজন করা যায়।
সেগুলোই এখন শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
আড্ডায় নাস্তা থাকা চাই। ইন্টারনেটে রেসিপি দেখে ঘরে থাকা সব জিনিস দিয়ে সবাই মিলে কিছু বানানোটাও হয়ে উঠতে পারে দারুণ উপভোগ্য একটি সময়। এমন কিছু পরিবেশন করা জরুরী যেন সন্ধ্যার হালকা ক্ষুধাটা মিটে যায়, আবার রাতের খাবারের জন্যও রুচি বজায় থাকে। যেকোনো ধরনের ফ্রাইড আইটেম চায়ের সাথে খেতে ভালো লাগে। স্যান্ডউইচ, পাকোড়া, বেগুনি, আলুর চপ, পেয়াজু ইত্যাদি সবগুলোই খুব সহজে ঘরে বানিয়ে ফেলা যায় এবং এর গুণগত মানও থাকে ভালো। মিষ্টি আইটেমের মধ্যে কেক, হালুয়া, তালের পিঠা বা কলার পিঠা খুবই পছন্দসই খাবার।
লুডু, উনো, টুয়েন্টি নাইন, মনোপলি ও ক্যারাম – এই সবগুলো ইনডোর গেইমই আড্ডায় খুব জমবে। এছাড়াও চাইলে গানের কলি কিংবা গেসিং গেইমও খেলতে পারেন। সবাই মিলে গোল হয়ে বসে এসব খেলে খুব সহজেই ক্লান্তিময় দিনের গ্লানি ভুলে যাওয়া বা একটি উইকেন্ড আনন্দময় করে তোলার মাঝে লুকিয়ে আছে একরাশ শান্তি।
এখন টিভিতে বসেই দেখা যায় নেটফ্লিক্সের কোন সিরিজ বা মুভি। কিন্তু কোনটা রেখে কোনটা দেখবেন এটা নিয়েই চিন্তা। সেক্ষেত্রে সিনেমার নামের চিরকুট বানিয়ে লটারি করা যেতে পারে অথবা সপ্তাহের এক একটি দিনে এক এক জনের পছন্দের সিনেমা দেখা যেতে পারে। পরিবারের সবাই মিলে সিনেমা দেখতে বসার আগে পপকর্ন বানিয়ে নিতে ভুলবেন না কিন্তু।
পরিবারের সবাই মিলে শৈল্পিক কিছু চর্চা করলে সম্পর্কের আরো একটি ভিন্ন দিক উন্মুক্ত হতে পারে। ঘরকে অন্যভাবে সাজাতেও পারেন নিজেদের তৈরি অরিগামি বা পেইন্টিং দিয়ে। বাড়িতে শিশু থাকলে তাদের জন্য এই সময়গুলো হয়ে উঠতে পারে বিশেষভাবে আনন্দময়।
পরিবারের বন্ধন মজবুত হতে পারে পাতায় লেখা রূপকথার গল্পের মতো। আপনি আপনার শিশুকে বই পড়ে শোনাতে পারেন এবং নিজেও অবসরে বই পড়তে পারেন। এই ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে অক্ষর জোড়া একটা বইয়ে আপনি পাবেন অদ্ভুত একটি ভালো লাগার ছোঁয়া যা ছড়িয়ে যাবে আপনার মনে ও পরিবারে।
বদ্ধ ঘরে থেকেও পরিবারের সবাই মিলে প্রকৃতির কাছাকাছি কিছু সময় কাটাতে পারেন টবে গাছের চারা লাগিয়ে ও তার যত্ন নিয়ে। এতে করে আপনার শিশু শিখবে নতুন একটি প্রাণের যত্ন নিতে এবং তার সাথে আন্তরিকতায় আপনারও কিছু সময় কাটবে। ঘর থেকে যেহেতু এখন বের হওয়া হচ্ছে না বেশি, তাই নানা ধরনের রান্নায় ব্যবহৃত ধনেপাতা, পুদিনা পাতা ও তুলসি টবে লাগাতে পারেন। এছাড়াও লেবু ও মরিচ গাছও টবে বড় হয়ে উঠতে পারে।
পরিবার আমাদের বন্ধু, আমাদের আশ্রয়, আমাদের প্রশান্ত গন্তব্য। পৃথিবীটা এই মুহূর্তে একটি অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে গেলেও এই সবকিছুর ভিড়ে বা একাকিত্বে পরিবারই একমাত্র শান্তি।
সন্ধার চায়ে হোক বা দিনের কাজের ফাঁকে, পরিবারের সাথে জমে উঠুক প্রতিটি মুহূর্ত।