By Tasnim Jarin
স্বাধীনতার মাস মার্চ। জাতি হিসেবে গর্ববোধ করার এই মাসটি যে শুধুই স্বাধীনতার কথা মনে করিয়ে দেয়, তা কিন্তু নয়। স্বাধীনতা অর্জন করার পেছনের সংগ্রাম, ত্যাগ এবং শোষণের স্বীকার হওয়া প্রতিটি মুহূর্ত রক্তক্ষয়ী এই স্বাধীনতার সাক্ষী। স্বাধীনতার গল্পের রয়েছে যেমন অনেক রঙ, তেমনি প্রতিটি রঙের রয়েছে একেকটি অনুভূতি। আর সে অনুভূতিরই একটি হলো আমাদের জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙ। তারুণ্য এবং সংগ্রামের সে রঙই আমাদের পরিচয়, আমাদের মত প্রকাশের বাহক, স্বাধীনভাবে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয়ার সাহস।
বিশ্ব মানচিত্রে যে যেখানেই থাকুক না কেন, লাল-সবুজ রঙের এই অনুভূতি নিঃসন্দেহে বিশেষ। এত শত রঙের মাঝে এই দুইটি রঙ যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয় অতীতের কথা। এই রঙের আভা, অনুভূতি এবং গল্প যেন একই সুতোয় গাঁথা। আর তাই তো আপন নীড়েও থাকা চাই স্বাধীনতার ছোঁয়া।
আর এক্ষেত্রে ঘরের একটি নির্দিষ্ট দেয়াল আলাদা করে ডিজাইন করা যেতে পারে। এই দেয়ালটির নাম রাখতে পারেন ‘স্বাধীনতার ক্যানভাস’। রঙ-তুলি নিয়ে যারা কাজ করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এই দেয়ালটি হবে একটি স্বাধীন দেয়াল। লাল-সবুজ রঙের প্রাধান্য বেশি থাকবে এ দেয়ালে। তবে আপনি চাইলে রঙের অন্য শেডও ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার জানা স্বাধীনতার গল্প শব্দে না লিখে বরং নিজের মতো করে এই দেয়ালে বিভিন্ন মোটিফ এঁকে আপনি সুন্দর একটি ডিজাইন করে নিতে পারেন। আইডিয়া যেমন দারুণ হবে, তেমনি দেখতেও বেশ সুন্দর দেখাবে নিশ্চিত।
আর যারা নিজেরা রঙ-তুলি নিয়ে কাজ না করে থাকেন, তারা দেয়ালের জন্য লাল-সবুজের দারুণ একটা ইলিউশন করিয়ে নিতে পারেন। আর অবশ্যই সে দেয়ালের কর্নারে রাখতে হবে একটি বা দুইটি ফোকাস লাইট। এতে করে স্বাধীনতার ক্যানভাস যেন আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
এছাড়া বসার ঘরের নির্দিষ্ট কোন দেয়ালে সবুজ রঙের কয়েকটি শেড দিয়ে লম্বালম্বিভাবে পেইন্ট করে নিতে পারেন। দেয়ালের ঠিক মাঝ বরাবর এবার একটি লাল রঙের স্টুডিও কাউচ রেখে দিন। আর কর্নারে লালচে পাতাবাহার গাছ আর অন্যপাশে স্ট্যান্ড ল্যাম্প রাখলেই পারফেক্ট দেখাবে।
বসার ঘর কিংবা ড্রইংরুমের শেলফের জন্য ছোট ছোট কিছু সবুজ পাতাবাহার গাছ কিনে নিন। মাঝের তাকে রাখুন বাংলাদেশের মানচিত্র কিংবা একটি গ্লোব। তবে বিশেষ কিছু করতে চাইলে বাংলাদেশের বিশাল বড় একটা মানচিত্র টানিয়ে দিতে পারেন ঘরের যেকোনো দেয়ালে। অথবা একটা সাদা ক্যানভাসে লাল-সবুজ চার্ট পেপারে পতাকা অথবা মানচিত্র এঁকে তা দিয়েও সাজাতে পারেন লিভিং রুমের দেয়াল। পাশে থাকবে বাংলা বর্ণের কিছু অক্ষর, হতে পারে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা শুধুই নামের আদ্যক্ষর।
সময়টা কৃষ্ণচূড়া ফুলের, তাই চাইলে দেয়ালে লাল রঙ দিয়ে ফুলের কিছু ইলিউশন করে নিতে পারেন। দেয়ালের অপর পাশে যদি কোন জানালা থাকে বা আলোর ব্যবস্থা থাকে, তবে সেখানে সাদা রঙের নেটের পর্দা ঝুলিয়ে দিন দেখতে দারুণ দেখাবে।
স্বাধীনতা উদযাপনের বিশেষ এই উদযাপনে আপনি চাইলে বাসায় একটি ছবি আঁকার আসর করতে পারেন। যেখানে পরিবারের ছোট বাচ্চারা লাল-সবুজ থিমে আঁকবে মাতৃভূমির বিভিন্ন ছবি। পরবর্তীতে ফ্রেমেবন্দী ছবিগুলো জায়গা করে নিবে ঘরের দেয়ালে। স্বাধীনতা দিবসে করা ছোট্ট এই আয়োজনটি বাসার ছোট বাচ্চাদের মধ্যে দেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ যেমন বাড়িয়ে দিবে, তেমনি বাসার দেয়ালে শোভা পাবে স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ।
সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার সাহসী সেই যোদ্ধাদের কারণেই বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। তবে আক্ষরিক অর্থেই স্বাধীনতার এ অনুভূতি ধরে রাখতে লম্বা পথ পাড়ি দেয়া এখনও যে বাকি। স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তিতে তাই লাল-সবুজের আদলে আঁকা বাংলাদেশের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।