by Sadia Islam Bristy
শরৎকাল মানেই শারদীয় দূর্গাপূজার আমেজ। পূজার আর বেশিদিন বাকি নেই। শুরু হয়েছে তোড়জোড়ও! যেকোনো উৎসবেই বাঙালি ঘরে লাগে ঘর সাজানোর ধুম। বর্তমান পরিস্থিতিতেও সেটার যেন কোন কমতি না হয় তা নিশ্চিত করতেই আমাদের আজকের এই আয়োজন। ঐতিহ্য, নতুনত্ব আর আনন্দের রেশের মিশেলে এবারের পূজোটাকে পরিবারের সব সদস্যের কাছে আরো বেশি উপভোগ্য করে তুলতে চান? তাহলে সঙ্গী হোন আমাদের!
দেয়ালের রঙ হালকা হলে সেখানে থাকা ছবি ও আনুষাঙ্গিক জিনিসগুলো আরো বেশি ফুটে ওঠে। আর এই আয়োজনের সময়ে দেয়ালে মাটির দূর্গাপ্রতিমার মুখায়ব তো রাখাই যায়। সাথে অন্যান্য উপকরণ দিয়ে ঘরকে নতুন করে সাজিয়ে তুলতে দেয়ালকে রাঙিয়ে তুলুন হালকা রং-এ!
কেমন হয় যদি ঘরের মেঝে জুড়ে আলপনা ফুটিয়ে তোলা হয়? বাঙালি সংস্কৃতির সাথে পূজোর আলপনা যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। মেঝেতে রঙ দিয়ে এঁকে ফেলতে পারেন মনের মতো আলপনা। তবে টাইলসের মেঝে হলে সেক্ষেত্রে রঙয়ের বদলে ফুলের পাপড়ি অথবা পাউডার রঙ ব্যবহার করা যেতে পারে।
পূজা মানেই নানান রকমের ফুল। তাই ঘরের দরজা থেকে শুরু করে অন্দরমহল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিন ফুলের সৌন্দর্য। দরজার দুইপাশে ঝালরের মতো ফুল লাগিয়ে দিন। ঘরের কিছু স্থানে ফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজাতে পারেন। এছাড়া বসার ঘরের ফুলদানিতেও কিছু ফুল রাখতে পারেন সহজেই। আরো বেশি অন্যরকম হয় যদি একটি মাটির বড় পাত্রে পানি ভর্তি করে তাতে ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এতে করে পুরো ঘরজুড়ে এক রকমের স্নিগ্ধতা মেখে থাকবে!
দূর্গাপূজা মানেই মনজুড়ে স্নিগ্ধ আর উৎসবমুখর এক আমেজ। ঘরের জানালার পর্দাগুলোতেও সেই আবেশ ছড়িয়ে দিতে সাদা রঙয়ের পর্দা বেছে নিন। ইচ্ছে করলে নানান রঙয়ের ব্লকের কাজ করা বাহারি পর্দাও বেছে নিতে পারেন। এতে করে আনন্দ ও প্রশান্তি দুটোই একসাথে কাজ করবে। ঠিক একইভাবে ঘরের বিছানার চাদরের রঙটাও বেছে নিন উৎসবের কথা মাথায় রেখে। এক্ষেত্রে সাদা ও লাল রঙের প্রাধান্য দেওয়াই শ্রেয়।
প্রতিদিন সেই চেনা-পরিচিত থালায় তো খাওয়া হয়ই। পূজার দিনে খাবারের পরিবেশনাতে ভিন্নতা আনতে কাঁসা বা পিতলের থালা-বাসন বেছে নিন। এতে করে পূজার আমেজ তো আসবেই, একইসাথে আনন্দও বেড়ে যাবে শতগুণ।
পূজা মানেই চারিদিকে আলোর ছটা। তাই মরিচবাতি আর মোমবাতির পাশাপাশি ঘরে রাখুন প্রদীপ। ঘরের মেঝে, বসার ঘরের টেবিলের উপরে। শোকেসের উপরে- মানানসই স্থানে রাখার জন্য রুপা, মাটির তৈরি প্রদীপ কিনতে পাবেন আপনি। সত্যিই তো! প্রদীপ ছাড়া কি আর পূজা হয়?
ঘরের সোফাগুলোকে সরিয়ে এই সময়ে শীতলপাটি বিছিয়ে দিন মেঝেতে। পাটি না থাকলে মাদুর পেতে দিন। পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলে একসাথে খাবার খাওয়া হবে, ব্যাপারটাই অন্যরকম!
কী ভাবছেন তাহলে? এবারের পূজা হয়তো আগের মতো প্রতিবেশী আর বন্ধু-আত্মীয়দের সাথে পালন করা হচ্ছে না। তবে ঘরের মধ্যেই পূজাকে অন্যরকম করে তোলার চেষ্টা তো করাই যায়, তাই না? তাহলে এবার সেই চেষ্টাটাই চলুক। দূর্গাপূজার আমেজ ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি ঘরে!